সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৩ অপরাহ্ন
মোঃ সোহাগ- ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধিঃ
সূত্রঃ ফুলপুর থানার মামলা নং-১৮, তারিখ-২০/০৮/২০২২খ্রিঃ, ধারা-৩৯৫/৩৯৭/৪১২ পেনাল কোড।
ময়মনসিংহের ফুলপুরে গত ইং ১৬/০৮/২০২২ইং তারিখ রাত্রি অনুমান ২১ঃ৩০ ঘটিকার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জানতে পারেন, ফুলপুর থানাধীন ভাইটকান্দি ইউনিয়নের বড় চিলাগাই সাকিনস্থ আব্দুল্লার মোড়ে কিছু সংখ্যক চোরাই ভোজ্যতেলের ভর্তি ড্রাম একটি গোডাউনে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। যে স্থানে ভোজ্যতেলের ড্রাম মজুদ রেখেছে সে স্থানে কোন তেল ব্যবসায়ী ছিল না।
পরবর্তীতে পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে ফুলপুর থানাধীন ভাইটকান্দি ইউনিয়নের বড় চিলাগাই সাকিনস্থ আব্দুল্লার মোড়ে জনৈক মোঃ শাহজাহান মিয়া (৪২) পিতাঃ আঃ করিম, সাং- চক গদাধর, থানা ফুলপুর, জেলাঃ ময়মনসিংহের গুদাম ঘর হতে ৪৪টি ভোজ্য তেল ভর্তি ড্রাম ১৬/০৮/২০২২ইং দিবাগত রাত্রী ১০ঃ৩০ ঘটিকার সময় উদ্ধার করে। যার মূল্য আনুমানিক ১১,৭৮,৪৭৬/= (এগার লক্ষ আটাত্তর হাজার চারশত ছিয়াত্তর) টাকা।
ইতিমধ্যে সন্ধান পাওয়া যায় উক্ত ভোজ্যতেলের ড্রাম গুলোর সত্ত্বাধিকারী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ ওরফে হৃদয়, পিতাৎ মোঃ হেলাল উদ্দিন সাং কেওয়া চন্নাপাড়া, (শ্রীপুর পৌরসভা) থানাঃ শ্রীপুর, জেলাঃ গাজীপুর।
উক্ত বিষয়ে জনৈক আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ ওরফে হৃদয়, পিতা-হেলাল উদ্দিন, কেওয়া চন্নাপাড়া, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর জানান, গত ১৫/০৮/২০২২ইং তারিখ দিবাগত রাত অনুমান ১২ঃ৪০ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানাধীন কাউনি নামক স্থানে একটি সাদা রংয়ের হায়েস মাইক্রোবাস দ্বারা ৭/৮ জনের একটি ডাকাত দল তার মালিকানাধীন ৬০ ড্রাম ভোজ্যতেল ভর্তি ট্রাকের সামনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে নিজেদেরকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ট্রাকের ড্রাইভার, হেলপার ও ম্যানেজারকে ট্রাক হতে নামিয়ে ইলেকট্রিক শক দিয়ে হাত-চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসের পিছনের সিটে ফেলে রাখে। ডাকাত দলের সদস্যরা ৬০ ড্রাম ভর্তি ভোজ্যতেল ও তেলবাহী ট্রাকটি ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
উক্ত বিষয়ে এজাহার দায়ের করলে ফুলপুর থানার মামলা নং-১৮ তারিখ ২০/০৮/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩৯৫/৩৯৭/৪১২ পেনাল কোড রুজু করা হয়। ফুলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মামলাটি তদন্ত করছেন। তদন্তকালে লুণ্ঠিত আরো ১৫ ড্রাম ভোজ্যতেল হালুয়াঘাট থানা এলাকা হইতে উদ্ধার করা হয়। মামলাটি তদন্তকালে ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাস যার নম্বর-ঢাকা- মেট্রো-চ-১৫-১৯৯৭ সনাক্তকরণপূর্বক খিলগাঁও থানা, ডিএমপি, ঢাকা এলাকা হতে জব্দ করা হয়। মাইক্রোবাসের ড্রাইভার, রেন্ট-এ কারের মালিক ও সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানের ধারাবাহিকতায় ডাকাতির ঘটনায় সরাসরি জড়িতদের সনাক্ত করে ডিএমপি, ঢাকা এর খিলগাঁও, সবুজবাগ এলাকা হতে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ডাকাত ১। মোঃ আরিফ মিয়া(২৫), পিতা-মৃত আসাদ মিয়া, মাতা-মৃতঃ মনোয়ারা বেগম, সাং- ফকিরখালী (সোনা মিয়ার বাড়ীর নিকট মাতাব্বর বাড়ীর উত্তর পার্শ্বে মৃত আতাব আলীর বাড়ী), থানা-খিলগাঁও, ডিএমপি, ঢাকা, বর্তমান ঠিকানা-প্রযত্নে বড় ভাই মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সাং-১৮৯৬/ দক্ষিন ধনিয়া (নূর মোহাম্মদ সিকদার এর ভাড়াটিয়া), থানা- কদমতলী, ডিএমপি, ঢাকা ২। আজগর আলী(২০), পিতা-ইলিয়াস আলী, মাতা-ইয়াসমিন বেগম, সাং-বেগুনবাড়ী কাঠেরপুর, থানা-সবুজবাগ, ডিএমপি, ঢাকা ৩। মোঃ শাকিব(২০), পিতা-মোঃ ইমান আলী, মাতা-শাহনাজ বেগম, সাং-বাসা নং- ৩০৯, ওহাব কলোনী, বাসাবো, থানা-সবুজবাগ, ডিএমপি, ঢাকা ৪। মোঃ আব্দুল খালেক (৪৩), পিতা-মৃতঃ ইউনুছ আলী মোল্লা, মাতা-মিনারা বেগম, সাং-পরীখাল (ছোট্ট বালিয়াতলী), থানা-বরগুনা সদর, জেলা-বরগুনা, এ/পি-বাসা নং-১৫৬ মান্ডা, থানা-মুগদা, ডিএমপি, ঢাকাদেরকে গত ২৬/০৮/২০২২ইং তারিখে গ্রেফতার করা হয়।
উক্ত ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামীরা আন্তঃজেলা পেশাদার ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃত আসামীরা ঘটনার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রদান করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
উদ্ধারকৃত মালামালের বিবরণঃ
১। ৫৯টি ভোজ্যতেলের ড্রাম, যার মধ্যে ৪টি খালি, সর্বমোট ৫৫টি ভোজ্যতেল ভর্তি ড্রাম যার প্রতিটিতে ১৮৬ লিটার করে ১০,২৩০ লিটার ভোজ্যতেল, যার মূল্য অনুমান ১৪,৭৩১২০/-টাকা।
২। একটি ট্রাক যার রেজিঃ ঢাকা মেট্টো ট-১৫-৫০৪৫, মূল্য অনুমান ১৬,০০০০/-টাকা।
৩। ডাকাতির ঘটনার সময় ব্যবহৃত একটি সাদা রংয়ের হায়েচ মাইক্রোবাস। যার রেজিঃ নম্বার ঢাকা-মেট্রো চ-১৫-১৯৯৭।
৪। ২টি মোবাইল সেট, মূল্য-৮,৫০০/-
৫। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ২টি লেজার লাইট।
৬। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সাইজের ৪টি টর্চ লাইট।
৭। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১০টি মোবাইল সেট।
৮। ১টি আরিফ হোসেন নামীয় সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের চেক বই যার একাউন্ট নং-০৭২১৩৪০০৬৪০১৯
৯। ১টি আরিফ হোসেন নামীয় সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এর ক্যাশ/চেক ডিপোজিট বুক।
১০। ডাকাতির ঘটনায় প্রাপ্ত ভাগের টাকা দিয়ে ক্রয়কৃত ১টি ১৫০ সিসি হিরো হাংক মোটর সাইকেল, মূল্য অনুমান- ১,৬০,০০০/-টাকা।
১১। সেনাবাহিনীর পোশাক সদৃশ্য ১টি প্যান্ট ।
১২। নগদ টাকা- ১২,০০০/-টাকা।